Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

***এতদ্দ্বারা, মহেশপুর পৌরবাসীদের জানানো যাচ্ছে যে*** জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের দ্বৈততা পরিহার করার লক্ষ্যে নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির পিতা ও মাতার জন্ম নিবন্ধন সনদ দাখিল করতে হবে |  পৌর যেকোন সেবা গ্রহনের জন্য হোল্ডিং ট্যাক্স, পানির বিল, ট্রেড লাইসেন্স-সহ সকল প্রকার পৌর কর পরিশোধ বাধ্যতামূলক  |


মহেশপুর নামকরণ

ঐতিহ্যবাহী মহেশপুর পৌরসভার ইতিহাস

কালের আবর্তে মানব সভ্যতার ক্রমবিকাশের দীঘল পথ পরিক্রমার ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে ভারতীয় উপমহাদেশের বিশালাকায় মানচিত্রে বর্তমান ভারতবর্ষের সীমান্তের তীর ঘেঁষে বাংলাদেশের সীমান্তে অবস্থিত মহেশপুর উপজেলার প্রাণকেন্দ্র জলাঙ্গীর ঢেউয়ে ভেঁজা কপোতাক্ষের অববাহিকার বহু প্রাচীন নিদর্শন ইতিহাস ও ঐতিহ্য বুকে ধারণ করে সগৌরবে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে একটি সুপ্রাচীন ঐতিহ্যবাহী- সবুজ বনানী আর ঘাসে ভরা একটি জনপদ- মহেশপুর পৌরসভা। এটি বিত্ত বৈভব প্রতিপত্তি, কৌলিন্য ও আভিজাত্যের মসৃণ মৌলিকতার মোড়কে আবৃত ১২ টি হিন্দু জমিদারদের আবাসস্থল।




সিন্ধু-সভ্যতার আদলে গড়া এদের নগর পরিকল্পনা প্রাচীন সভ্যতার সৌন্দর্য ভাস্কর্য ও নির্মাণ শৈলীর এক নান্দনিক নিদর্শন ছিল এদের আবাসগৃহ যা বিদেশীদের সহজেই নজর কাড়তে সক্ষম হয়। এ ধারাবাহিকতায় অষ্টাদশ শতাব্দীতে ঔপনিবেশিক আমলের ইংরেজ শাসকরা স্বল্প দূরত্বে অবস্থিত কলকাতা থেকে গঙ্গা নদীর পথ বেয়ে ছোট ছোট জাহাজে বণিজ বেসাতির নামে কপোতাক্ষের ভরা যৌবনকালে এ নদীতটের জনপদে আসতে শুরু করে এবং অবাক বিস্ময়ে অবলোকন করে তাঁরা ১২ টি হিন্দু জমিদারের গড়া দৃষ্টিনন্দন অট্টালিকা (যা কালের গর্ভে বিলীন), রাস্তাঘাট, নর্দমা বা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাসহ শিক্ষা বিস্তার, নির্মল সংস্কৃতি স্থানীয় হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে অভাবনীয় এক অসম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য বন্ধন ও সম্মোহনীয় আথিতেয়তায়। এতে তাঁরা অভিভূত ও মুগ্ধ হয়। তাছাড়া হিন্দু জমিদারগণ অসাম্প্রদায়িক চেতনার আলোকে এখানকার পাড়ায় মহল্লায় বেশ কিছু মসজিদ ও মন্দির স্থাপন করেন। যা এখনও দৃশ্যমান।

এসবকিছু বিবেচনায় ইংরেজ শাসকদের নিজস্ব স্বার্থে এই ছোট জনপদকে টাউন কমিটি গঠন করে এর উন্নয়ন আরও বেগবান করার প্রয়াস পায়। পরবর্তীতে এর কার্যক্রম আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে লর্ড হিন্টন ১৮৬৯ সালে এ টাউন কমিটি পৌরসভায় উন্নীত করেন এবং পি বি মার্টিন সাহেবকে এই পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান নিযুক্ত করেন। তিনি পৌরসভার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, রাস্তাঘাটের সংস্কার ও দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপনের মাধ্যমে জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করেন। এছাড়াও শিক্ষা ব্যবস্থার পরিসর বৃদ্ধি করে উচ্চ বিদ্যালয় ও প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন এবং স্থানীয় জনগণকে আধুনিক সভ্যতার মানদন্ডে সচেতন করার লক্ষ্যে বিভিন্ন মহল্লায় ও গ্রামে ক্লাব বা সুস্থ সংস্কৃতি চর্চ্চা কেন্দ্র স্থাপন করা প্রয়াস পান। এরই ধারাবাহিকতা এখনও জনপদের মননে, চিন্তনে গ্রোথিত আছে। কিন্তু অবকাঠামোর চিহ্ন কালের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে যে দেশ বিভাগের পর এখানকার হিন্দু জমিদারদের দেশত্যাগের ফলে এ পৌরসভার চলমান গতি কিছুটা স্থিমিত হয়ে পড়ায় তৎকালীন পাকিস্তান আমলে পঞ্চাশের দশকে এটা মানের দিক থেকে কিঞ্চিত পরিমাণ অবনমিত হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয় এবং তা প্রশাসনিকভাবে কিছুটা এগিয়েও যায়। পরবর্তীতে এ জনপদের হিন্দু মুসলমান গণ্যমান্যব্যক্তিবর্গের প্রচেষ্টায় তা আবার তার স্বমর্যাদায় অধিষ্ঠিত হয়।

এরপর এ পৌরসভার নির্বাচিত নবীন ও প্রবীণ মুসলমান চেয়ারম্যান বা মেয়রগণ তাদের নিজ পরিকল্পনায় এ জনপদের জনজীবনকে সাজাতে বা বাঁচাতে এক আধুনিক মানসম্মত নগর গড়ার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন বা যাচ্ছেন এবং বর্তমানে অনেকাংশে সার্থকও হয়েছেন।

বলাবাহুল্য, বহু প্রাচীনকালে জয় বাবা বুড়ো শিব নামে বাবা মহেশ্বর নাম নিয়ে এক সন্ন্যাসী এখানে আস্তানা গড়েন এবং তৎকালীন হিন্দু জমিদারদের তত্ত্বাবধানে তাঁর নামে একটি হিন্দু মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। তাঁরই নামানুসারে এই জনপদের নাম হয় মহেশপুর।